প্রচ্ছদ আলোকিত মুখ অষ্টগ্রামের কলিমপুরের এক আলোকিত পরিবার
অষ্টগ্রামের কলিমপুরের এক আলোকিত পরিবার
বিশেষ প্রতিনিধি | ৪:০৫ অপরাহ্ন, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৯
বিশেষ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার হাওরবেষ্টিত আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের এক অজপাড়া গাঁয়ের নাম কলিমপুর। প্রান্তিক এ গ্রামটি আজ যার কারণে সবার কাছে সুপরিচিতি লাভ করেছে তিনি হলেন প্রয়াত মো. মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উর্দ্বতন কর্মকর্তা এবং আদমপুর দেওয়ান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। জ্ঞানচর্চায় তিনি ছিলেন সমাজের পথপ্রদর্শক। তিনি সবসময়ই মানুষকে জ্ঞান আহরণসহ সকল বিষয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা দিতেন। এ বিষয়ে মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া ছিলেন এলাকার কান্ডারী। সমাজ ও এলাকার মানুষজন এ মহান জ্ঞানপিপাসু মানুষটিকে সবসময়ই ভীষণ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। তাঁরই ঔরসজাত আট সন্তান নিজেদের কর্ম ও গুণের মাধ্যমে আজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও আলো ছড়াচ্ছেন। আলোকিত করেছেন আব্দুল্লাহপুর-কলিমপুরসহ গোটা হাওরাঞ্চলকে। আসুন ক্রমান্বয়ে জেনে নেয়া যাক স্বার্থক এ বাবার সফল আট সন্তান সম্পর্কে।
মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. মাসুদুজ্জামান ভূঁইয়া: তিনি দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। মাসুদুজ্জামান বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত বিশেষ জাহাজ সিঙ্গাপুরের প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল লাইনস লিমিটেড-এ চীফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অত্যন্ত মেধা, কর্মদক্ষতা ও সুনামের সাথে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন।
কানিজ উম্মে খায়ের: কানিজ রাজধানী ঢাকার হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক। তাঁর স্বামী বাহারুল ইসলাম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ময়মনসিংহের বিখ্যাত আনন্দমোহন কলেজে অধ্যাপনা করছেন।
মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (লিটন): ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবীদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষে তিনি সমাজসেবক হিসেবে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পাশাপাশি তিনি পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মাজার স্টিলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে ব্যবসার হাল ধরেছেন।
ড. মো. খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া: হাইকোর্ট-সুপ্রীম কোর্টের একজন বিজ্ঞ আইনজীবী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি, এলএলএম সম্পন্ন করে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে স্ট্যান্ড করেছিলেন। তাঁর সহধর্মীণীও আইন পেশায় নিয়োজিত।
ইঞ্জিনিয়ার মো. আশরাফুজ্জামান ভূঁইয়া: এ বিসিএস কর্মকর্তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর স্ত্রী ঢাকা জেলার যুগ্ম জেলা জজ।
প্রফেসর ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া (কাঞ্চন): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান। পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ঢাকাস্থ অষ্টগ্রাম উপজেলা উন্নয়ন ও কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বদরুজ্জামান ভূঁইয়া একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনীতি বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি দেশের মিডিয়া অঙ্গণে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তাঁর লেখনির মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এ শিক্ষাবীদের সহধর্মীণী ড. মুনিরা সুলতানা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক।
প্রফেসর মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া: তিনি নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের (আইআইটি) চেয়ারম্যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর স্ত্রী রাষ্ট্রীয় অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত।
মো. আকতারুজ্জামান ভূঁইয়া: জুডিসিয়াল ক্যাডারের এ কর্মকর্তা হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (যুগ্ম জেলা জজ) হিসেবে কর্মরত। তাঁর সহধর্মীণী ঢাকার দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে নিয়োজিত আছেন। নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সফল এ আট সন্তানের রত্নগর্ভা মা রওশন আরা বেগম অষ্টগ্রামের আদমপুর ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পুরো পরিবারটিকে তিনি অত্যন্ত যত্নসহকারে মায়া-মমতায় আগলে রেখেছেন। এই পরিবারের সকল সদস্য তাদের যার যার অবস্থান থেকে সমাজ, এলাকা ও দেশের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আলোকিত এ পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (লিটন) দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এলাকার মানুষের জন্য অবিরামভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ও তাঁর পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। আগামী মার্চ মাসে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী লিটন। দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দক্ষতা ও সুনামের সাথে কাজ করতে পারবেন বলে এলাকাবাসী মনে করেন।
5 Comments