শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 
vatirrani News

প্রচ্ছদ পাকুন্দিয়া সচিব-এমপির রাজনীতি নিয়ে উত্তাল কটিয়াদী

সচিব-এমপির রাজনীতি নিয়ে উত্তাল কটিয়াদী

বিশেষ প্রতিবেদক | ১০:৪৯ অপরাহ্ন, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

1612802977.jpg

বিশেষ প্রতিবেদক: একজন বর্তমান স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান অপরজন সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ও কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি নূর মোহাম্মদ। বর্তমান ও সাবেক দুই আমলার প্রকাশ্য বিরোধ নিয়ে কিশোরগঞ্জ এখন টালমাটাল দুজনের বাড়ি আবার একই ইউনিয়নে; কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুরে। স্থানীয়রা বলছেন, এ বিরোধ মূলত রাজনৈতিক। আর দুজনের ভাষ্য থেকেও এমন ধারণা মেলে।

এদিকে গত রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কটিয়াদী পৌরশহরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্বাস্থ্য সচিবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডের পথসভায় স্বাস্থ্য সচিবকে কটিয়াদীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। এছাড়া স্বাস্থ্য সচিবের বাড়িতে কয়েক দফা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় রবিবার কটিয়াদী থানার ওসি এম. এ. জলিলকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

সহকারী কমিশনারকে প্রহার ও সরকারি স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধনের মামলায় রবিবার ভোররাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হচ্ছে মসূয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি, রামদীর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান সাজু, আচমিতা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি কামাল হোসেন ও কটিয়াদী পৌর ছাত্রলীগের ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি মেহেদী হাসান। এঁরা সকলেই এমপি নূর মোহাম্মদের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ কটিয়াদীর ঘটনায় দুটি মামলা নথিভুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসির প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, তাকে রবিবার প্রত্যাহার করে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জে সম্পৃক্ত করা হয়েছে এবং আসামীদের কে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অভ্যাহত রয়েছে।

আওয়ামী লীগের রবিবারের পথসভায় বক্তারা বলেছেন, ‘স্থানীয় এমপি নূর মোহাম্মদের সঙ্গে কোনো ধরণের যোগাযোগ রক্ষা না করে স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান এলাকায় নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। একজন সরকারি আমলা হওয়ার সুবাদে স্থানীয় প্রশাসনকে তিনি এমপির বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলেন এবং নানা উস্কানি দেন’। মিছিলে স্বাস্থ্য সচিবের নাম উল্লেখ করে নানারকম অশালীন শ্লোগান দিতে শোনা যায়। পথসভায় বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ড. জায়েদ মো. হাবিবুল্লাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট দিলীপ কুমার ঘোষ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিলন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার আহমেদ পাভেল ও আওয়ামী লীগ নেতা দুলাল বর্মণ প্রমুখ।

বর্তমানে কটিয়াদীতে দুই আমলার বিরোধের ঘটনাকে উপলক্ষ করে এলাকা সরগরম। জানা যায়, স্বাস্থ্য সচিব প্রায়ই বাড়ি আসেন। তিনি সরাসরি কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত না হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের ‘বঞ্চিত’দের একটি অংশের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক থাকাকালে স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান স্থানীয় আওয়ামী লীগের ‘পৃষ্ঠপোষকতা’ করেছেন বলে গুঞ্জন ওঠে। বিষয়টিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেউ কেউ সামনে আনেন।

স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান ভবিষ্যতে এমপি নূর মোহাম্মদের ‘পথের কাঁটা’ হতে পারেন- এ আশঙ্কা থেকেই এমপির ঘনিষ্ঠরা স্বাস্থ্য সচিবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে। স্বাস্থ্য সচিবের এলাকায় তৎপরতা দেখেও এমনটি মনে হয়েছে অনেকের।

পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এমপি নূর মোহাম্মদ তাঁর ভাষায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার নির্দেশ থাকলে তো সে (স্বাস্থ্য সচিব) এলাকাতেই আসতে পারবে না! এ নির্বাচনী এলাকা আমার। এলাকায় কী হবে না হবে, কোনো উন্নয়ন কাজ হবে, সরকারি বরাদ্দ কোথায় যাবে- এ দায়িত্ব আমার। এখানে অন্য কেউ এসে (উন্নয়ন) করলেও আমাকে জানাতে হবে। এটা মেন্ডেটরি। যদি সে (স্বাস্থ্য সচিব) না জানিয়ে এ কাজ (উন্নয়ন কর্মকান্ড) করে অপরাধ করেছে, অন্যায় করেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত’।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান তাঁর বাড়ি ও কমিউনিটি ক্লিনিকে হামলায় ঘটনার পেছনে এমপি নূর মোহাম্মদের ইন্ধন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

Post Your Comment

সম্পাদক: গোলাম রসূল, উপদেষ্টা সম্পাদক: কুদ্দুস আফ্রাদ ও ইব্রাহিম খলিল খোকন, নির্বাহী সম্পাদক: এস. এম. ফরহাদ
বার্তাকক্ষ: 01911214995, E-mail: info@vatirrani.com
Developed by CHAHIDA.COM