শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
 
vatirrani News

প্রচ্ছদ মুক্তমঞ্চ লেজুড় ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ ও শিক্ষার মান রক্ষা

লেজুড় ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ ও শিক্ষার মান রক্ষা

কামরুল হাসান বাবু | ৯:২৯ অপরাহ্ন, ২০ অক্টোবর, ২০১৯

1571585366.jpg
কামরুল হাসান বাবু

কামরুল হাসান বাবু: রাজনীতি বন্ধ করতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা উচিত সবার আগে । দলীয় লেজুড় কিছু শিক্ষকের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কোন অংশে কম হয়না । নষ্ট দলীয় ছাত্র রাজনীতির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয় এটা এখন সর্বজন স্বীকৃত ।

দলীয় শিক্ষক রাজনীতির কবলে পরে শিক্ষার প্রকৃত মান নষ্ট হচ্ছে এটাও এখন সমাজে বিশেষ ভাবে আলোচ্য বিষয় । বড় পদ ও বিভিন্ন অবৈধ অনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য এসব শিক্ষকরা ছাত্র নেতাদের ব্যবহার করেন বলেও আলোচনা রয়েছে । অবৈধ সুবিধা নেয়া ঐসব শিক্ষকরা পরবর্তি সময়ে ছাত্র নেতাদের অন্যায় কাজে বাঁধা দেয়ার অধিকার হারিয়ে ফেলেন ।

গবেষণা আর শিক্ষাদান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রধান কাজ হলেও প্রকৃত উদ্দেশ্য বাদ দিয়ে শিক্ষকদের একটি বড় অংশ রাজনীতির নামে সুবিধা আদায়ে ব্যস্ত থাকেন এমন আলোচনা বহুদিন ধরেই চলমান । অনেক উঁচু দরের বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষিত সম্মানীত শিক্ষক যখন নির্লজ্জ ভাবে দলীয় সহানুভূতি আদায়ের জন্য পা চাটা দলীয় দালালী করেন তখন একজন নাগরিক হিসাবে লজ্জা বোধ করি । ওরা দলে ছোট কিন্তু শিক্ষক সমাজের নেতা বা প্রতিনিধি হিসাবে পরিচিত। উনাদের জন্য সম্পূর্ণ শিক্ষক পরিবার সমাজে অসম্মান বোধ করেন ।

দলীয় লেজুড় ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পক্ষে হলেও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পক্ষে আমি নই । দেশের ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরীর জন্য নৈতিকতা সমৃদ্ধ সুশিক্ষার পাশাপাশি সুস্থ্য রাজনীতি চর্চা অপরিহার্য। কিন্তু এখন ছাত্র রাজনীতির যে প্রকৃয়া চলমান তাতে নেতৃত্ব নয় বরং দুর্বৃত্ত তৈরীর সম্ভাবনা অনেক বেশী যা ইতোমধ্যেই প্রতীয়মান । সুস্থ্য ছাত্র রাজনীতির সুরক্ষা দরকার। এ জন্য একটি স্পষ্ঠ সুচিন্তিত জাতীয় নীতি প্রণয়ন করা দরকার যা আগামী দিনের ছাত্র রাজনীতিকে পথ দেখাতে সাহায্য করতে পারে ।

বহু বছর ধরে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। দলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতাও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত নয় । অনেকেই বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৃত ছাত্রনেতা নির্বাচিত হোক সেটা নাকি রাজনৈতিক লেজুড় শিক্ষক নেতারা চান না। এতে নাকি ওনাদের অবৈধ সুবিধা নেয়ায় পথ সুরক্ষিত থাকে না ।

শিক্ষকদের নিজস্ব দাবী আদায়ের জন্য, সুবিধা অসুবিধা দেখার জন্য উনাদের নিজস্ব সংগঠন থাকবে এতে কারো কোন আপত্তি নেই। সেখানে জাতীয় বিভিন্ন বিষয়ে উনারা অবদান রাখবেন । জাতির মেধাবী সন্তানেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা দান করেন। তাদের পরামর্শ রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে । সম্মানের বিবেচনায় একজন শিক্ষকের চেয়ে বেশী সম্মানীত ব্যক্তি আর কেহ নন ।

শিক্ষক যেমন মানুষ গড়ার কারীগর তেমনি ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ । ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের আগামী দিনের নেতা আর শিক্ষক সেই নেতা তৈরীর কারীগর । আমার হিসাবে এই দুই শ্রেণি পেশার মানুষ একটি জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।এদের রক্ষা করতে হবে সবার আগে । তাই এখনই সময়, ভাবতে হবে দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে দেশের জন্য দেশের আগামী প্রজন্মের জন্য জাতীয় স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দিয়ে ।

শিক্ষক থাকুক সর্বোচ্চ সম্মানীত স্থানে মানুষ গড়ার কারীগর হয়ে। ছাত্র- ছাত্রীরা প্রকৃত সুশিক্ষা পেয়ে সুস্থ্য ছাত্র রাজনীতি চর্চার মধ্য দিয়ে তৈরী হোক আগামী দিনে নেতৃত্ব দেয়ার উপযোগী হয়ে । বন্ধ হোক দলীয় লেজুড় ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি ।

লেখক : সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও রোটারীয়ান 

Post Your Comment

সম্পাদক: গোলাম রসূল, উপদেষ্টা সম্পাদক: কুদ্দুস আফ্রাদ ও ইব্রাহিম খলিল খোকন, নির্বাহী সম্পাদক: এস. এম. ফরহাদ
বার্তাকক্ষ: 01911214995, E-mail: info@vatirrani.com
Developed by CHAHIDA.COM