প্রচ্ছদ সাহিত্য ও সংস্কৃতি কাঙ্গাল
কাঙ্গাল
খাইরুল ইসলাম | ৯:৪৩ অপরাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭
খাইরুল ইসলাম
কাঙাল পথে পড়ে আছে,হারিয়েছে ঘরবাড়ি।
নষ্ট করেছে রাস্তার সৌন্দর্য আটকে দিয়েছে গাড়ি।
"ও বাবা একটা টাকা দাওনা মোরে,
দুদিন রয়েছি ভূখা, মরছি অনাহারে।"
ছিঃ কি নোংরা!
কিরে তোদের কি নাই কোন লাজ?
এখন আবার রাস্তায় নেমেছিস ছেড়ে দিয়ে কাজ।
তোদের জ্বালায় মোদের আজ রাস্তায় নামা দায়,
এখন আমার যেতে হবে পথটা ছাড়ত যাই।
"বাবা,ও বাবা,
আমার দুটো মেয়ে আছে পেটের খিদায় বেহুশ,
বউটা আমার চিকিৎসার অভাবে প্রতিবন্ধী মানুষ।
আমি বাবা বুড়ো মানুষ পরিশ্রম গায়ে না সয়।
তাইতো আমার তোমাদের কাছে হাত পাততে হয়।"
দূর যা শালা,বাঁচতে যদি চাস রাস্তা ছেড়ে পালা।
বৃদ্ধ তখন চলে আসে, ঝাপসা তাহার দৃষ্টি,
এই জগতে একি বিধির নির্মম অনাছিষ্টি!
খোড়াতে খোড়াতে হাটতে থাকে
চোখ জলে টলমল।
এমনি সময় সামনে পড়ে জনমানবের ঢল।
বৃদ্ধ তখন খুড়িয়ে, দৌড়িয়ে যায় সেথা ছুটে উল্লাসে
এখানে বুঝি সাহায্য পাবে এমনি স্বপ্ন চোখে ভাসে।
সভায় এসে অবাক হয়,একি বিরাট আয়োজন!
নিশ্চয় এখানে হবে বিশাল গণভোজন।
লালসায় বৃদ্ধ দাড়ায় সভায়,
বক্তৃতা শুনে আর ঘাড় নাড়িয়ে হাসে,
হাসির মানে রয়ে যায় অগোচরে কিছুই নাহি বুঝে!
দুপুর পেরিয়ে সন্ধা হলো খিদায় বুড়ো দিশাহারা।
এই বুঝি সে মরে গেল, বাচঁবেনা অন্নছাড়া।
বাধ্য হয়ে তাই সে যায় খাবার করতে চুরি
মন্ত্রী -মিনিস্টারের খাবার তাই সে গেল ধরা পড়ি।
পুলিশ পেটে লাথি মারে ছোটলোক,কুত্তা, জানোয়ার,
দেশটাকে তোরা খেয়েছিস!বাকী রাখিস নি কিছু আর।
দাড়া এবার দেখাচ্ছি মজা ভাঙ্গব তোর হাত পা
বৃদ্ধ বলে"আমাকে ছেড়ে দাও,তুমিই আমার বাবা। "
ততক্ষণে শোরগোলে উপস্হিত মন্ত্রী -মিনিস্টার।
নির্দেশ তাহার জানুয়ারটাকে এক্ষুনি গুলি করে মার।
উত্তম মধ্যম পেয়ে বৃদ্ধ পায় অবশেষে ছাড়া
তাই বলে কি শূন্য হাতে, কোন খাবার ছাড়া!
বৃদ্ধ তখন আবোল তাবুল বকে ভাগ্য তাহার অন্ধ,
একটু অন্ন দিয়ে পিটালে তা কি হতো মন্দ?
এভাবে তার দিনাতিপাত খাবার জুটেনা ঘরে,
কয়েকদিনের মধ্যে সবাই এক এক করে মরে।
এতে দেশ সম্মানিত হয়,রাস্তাও হয় পরিস্কার,
ভদ্রলোকেরা বেঁচে থাকে,মৃত্যু ঘটে শুধু মানবতার।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভিয়ানগর, অষ্টগ্রামের কৃতি ছাত্র।