শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
 
vatirrani News

প্রচ্ছদ অষ্টগ্রাম অষ্টগ্রামে ধলেশ্বরী নদী ভরাট: পানির অভাবে বোরো জমি অনাবাদির আশংকা

অষ্টগ্রামে ধলেশ্বরী নদী ভরাট: পানির অভাবে বোরো জমি অনাবাদির আশংকা

মন্তোষ চক্রবর্তী, বিশেষ প্রতিবেদক | ৫:৪৪ অপরাহ্ন, ৫ জানুয়ারী, ২০২১

1609847094.jpg

মন্তোষ চক্রবর্তী, বিশেষ প্রতিবেদক: এক সময়ে অষ্টগ্রামের উন্মুক্ত ধলেশ্বরী নদীতে এখন অসংখ্য চর পড়ে বোরো ধানের জমিতে পরিণত হয়েছে। যেমন নেই নদীর উন্মুক্ততা তেমনি নেই নদীর পানি। ফলে নদী তীরবর্তী জেলেদের চলছে দুর্দিন। এমনকি মাঝেমধ্যে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী নৌকা আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।

কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব বাজার থেকে প্রবাহিত মেঘনা হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা ও হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম উপজেলা সীমান্তে এসে কালনী কুশিয়ারা নদীতে মিলিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নাম ধারণ করেছে। এই মেঘনা নদীর তীরবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুর, ডুবাজাইলের উত্তর দিকে বেকেঁ কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের হুমায়ুনপুর হয়ে অষ্টগ্রামের ভাটিরনগর, দেওঘর, কাস্তুল সদর হয়ে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে ধলেশ্বরী নাম ধারণ করে ইকুরদিয়ায় মেঘনা মিলিত হয়েছে। 

পর্যাপ্ত গভীর এ নদীর বড় বড় বেশ কয়েকটি হাওরে বোরো ধান উৎপাদনে সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে প্রচুর পরিমান ধান উৎপাদন করে বেশ সুখেই দিনাদিপাত করত স্থানীয় কৃষকেরা। সরকারিভাবেও আদায় হতো বিপুল পরিমানের রাজস্ব। জেলা প্রশাসক এই নদীটি ইজারা দিতেন বলে জানা যায়। 

এই নদী দিয়ে অষ্টগ্রাম থেকে ভৈরব বাজার, কুলিয়ারচর যাত্রী লঞ্চসহ অগনিত যন্ত্রচালিত নৌকা, কার্গো ইত্যাদি চলাচল করত। এছাড়াও ভৈরব বাজার ,আশুগঞ্জ ইত্যাদি নদী বন্দরে পণ্য সরবরাহ করা হতো। অথচ গত ৫-৭ বছরে পলি পড়ে ধলেশ্বরী নদীতে মাটি ভরাট হয়ে নদীর নাব্যতা হ্রাস পেতে থাকে। বর্তমানে অষ্টগ্রামের ভাটিরনগরের উত্তরে মেঘনা ও ধলেশ্বরীর সংযোগস্থলে জেগে উঠা চর হুমায়ুনপুর, কাস্তুল ও মসজিদজামের পাশ দিয়ে সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সেতুর পূর্ব দিকে ইকুরদিয়া পর্যন্ত প্রায় সম্পূর্ন ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন বোরো ধানের আবাদ করছে। 

এ প্রসঙ্গে পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাছেদ মিয়া জানান এই নদীটি ভরাটের কারণে গত বছর বেশ কয়েকটি মৌজার ২ থেকে ৩ হাজার হেক্টর জমি পতিত ছিল। এবছরও একই অবস্থা বিরাজ করছে জানিয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে নদীটি খননের দাবি জানান। 

হাওরাঞ্চলবাসী ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান কামরুল হাসান বাবু এ বিষয়ে বলেন হাওরের প্রচুর উন্নয়ন হচ্ছে তবে তা হচ্ছে অপরিকল্পিত এবং কতিপয় স্থানীয় স্বার্থানেশীদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীগুলো এমন ভাবে মরে যাচ্ছে।

যোগাযোগ করলে অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জেমস বলেন এই নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে একদিকে নৌ যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে এবং অন্যদিকে নদী তীরবর্তী কয়েক হাজার একর জমি সেচের অভাবে পতিত হয়ে পড়ছে। 

নদীটি দ্রত খননের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশের বিভিন্ন জেলাতে নদী খননের কাজ হচ্ছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথেও অনেকবার যোগাযোগ করেছি  কিন্তু সমাধান আসছে না।”

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত নিবার্হী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান নদীটি খননের জন্য বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

Post Your Comment

সম্পাদক: গোলাম রসূল, উপদেষ্টা সম্পাদক: কুদ্দুস আফ্রাদ ও ইব্রাহিম খলিল খোকন, নির্বাহী সম্পাদক: এস. এম. ফরহাদ
বার্তাকক্ষ: 01911214995, E-mail: info@vatirrani.com
Developed by CHAHIDA.COM